Top News

দুই স্ত্রী এক হয়ে পেটালেন স্বামীকে অতঃপর যা ঘটলো

দুই স্ত্রী এক হয়ে পেটালেন স্বামীকে অতঃপর যা ঘটলো

হাজিরা দিতে এসে আদালত চত্বরে সাবেক দুই স্ত্রী একত্রিত হয়ে নুর মোহাম্মদ নামের এক যুবককে জুতা দিয়ে মারধর করেছেন। রোববার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে পুরান ঢাকার নিম্ন আদালতে এমন ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শাহনাজ আক্তার নুর মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী এবং হ্যাপী আক্তার তার দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। রোববার ঢাকার নিম্ন আদালতে একটি মামলার দিন ধার্য ছিল। ফলে তারা তিনজনই আদালতে হাজির হন। তবে হাজিরা শেষে শাহনাজ ও হ্যাপী পায়ের জুতা খুলে নুর মোহাম্মদকে পেটান।

ওই সময় নুর মোহাম্মদ সাহায্যের আকুতি জানালে উপস্থিত জনতা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। তবে শাহনাজ ও হ্যাপীকে দমানো যায়নি। একপর্যায়ে নুর মোহাম্মদ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও সফল হননি। সাবেক দুই স্ত্রী দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরে আবারও মারধর করেন। এ ঘটনায় নুর মোহাম্মদ কিছুটা আহত হন। সেই সঙ্গে মারামারির ঘটনায় তার পরনের শার্ট ও গেঞ্জি ছিঁড়ে যায়। সাবেক দুই স্ত্রী যেভাবে পেরেছেন তাকে কিল-ঘুষি ও জুতাপেটা করেছেন। একপর্যায়ে আইনজীবীরা তাদের নিয়ে যান।

নুর মোহাম্মদের প্রথম স্ত্রী শাহনাজ আক্তার জানান, ২০১৫ সালে নুর মোহাম্মদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দুই বছর পর ২০১৭ সালে তাদের প্রথম কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আর ২০২২ সালে দ্বিতীয় মেয়ের জন্ম হয়। তবে মেয়ে হওয়ায় নুর মোহাম্মদ আমাকে ডিভোর্স দেয়। পরে জানতে পারি সে দ্বিতীয় বিয়ে করছে।

শাহনাজ আক্তার অভিযোগ করেন, ‘আকুতি-মিনতি করে তাকে বলেছিলাম, ছোট একটা বাসা নিয়ে মেয়েসহ আমাকে রাখো। সে আমাকে কোনোভাবে রাখেনি। মেয়ে দুটিকেও দেখতে দেয় না। তার এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে তার পরিবারও জড়িত। আমি ওদের ফাঁসি চাই।’

অন্যদিকে নুর মোহাম্মদের দ্বিতীয় স্ত্রী হ্যাপী আক্তার বলেন, ‘বিয়ের কয়েক মাস পর সে (নুর মোহাম্মদ) আমাকে জোর করে তালাক দেয়ায়। এরপর লুকিয়ে বেড়ায় এবং সবার কাছে বলে বেড়ায় আমি খারাপ। আমি বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। কোনো অন্যায় ছিল না আমার। ধুমধাম করে, ওর চাহিদা পূরণ করে বিয়ের ব্যবস্থা করেছে। ও একটা ফ্রড (প্রতারক)। ওর সুষ্ঠু বিচার চাই। ও যেন আর কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করতে না পারে।’

তবে নুর মোহাম্মদের দাবি ভিন্ন। তার ভাষ্য, ‘হ্যাপী আক্তার প্রতারণা করে আমাকে বিয়ে করছে। তাকে বলেছি, আমার স্ত্রীকে (শাহনাজ) ছাড়তে পারবো না। সে এত খারাপ মানুষ না। পরে আমাকে হুমকি দেয়, প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দিলে থানায় নিয়ে যাবে। আমাকে বাধ্য করে যেন প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিই।’

নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমার প্রথম স্ত্রীর পরিবার আর্থিকভাবে চাপ দেয়। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। এ কারণে তাকে তালাক দেই। দ্বিতীয় ফ্রড (দ্বিতীয় স্ত্রী) এসে বলে বাচ্চার দায়িত্ব নেবে।’

তিনি দাবি করেন, ‘প্রথম স্ত্রীর ভাই কয়েকদিন পরপর শুধু টাকা চায়। না দিলে বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ দেয়। মিথ্যা ঘটনা রটায়, হেয় প্রতিপন্ন করে। আমার মেয়ে বলে, আব্বু বিভিন্ন লোকজন বাসায় আসে, তারা থাকে। আমাকে মারধর করে অন্য রুমে রেখে দেয়। পরে তাকে তালাক দেই। আর হ্যাপী আমাকে প্রতারণা করে বিয়ে করে। সে আমার প্রথম স্ত্রীকেও মিসগাইড করছে। তাই আজ কোর্টে আসি। এ সময় তারা আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে।’

এ ব্যাপারে শাহনাজ ও হ্যাপীর আইনজীবী পাপিয়া সুলতানা বলেন, আজ একটি মামলার দিন ধার্য ছিল। সে অনুযায়ী আসামি নুর মোহাম্মদ আদালতে হাজির হন। সেই সঙ্গে তার সাবেক দুই স্ত্রীও আদালতে হাজির হন। পরে শুনানি শেষে শাহনাজ আক্তার ও হ্যাপী আক্তার মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছিলেন। ওই সময় নুর মোহাম্মদ দুইজনকেই তলপেটে লাথি মারেন। এর জেরেই মারধরের ওই ঘটনা ঘটে।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post