Top News

স্বামী যদি স'হবাসে অ'ক্ষম হয় তাহলে স্ত্রীর কী করা উচিত?"

 


স্বামী সহবাসে অক্ষম হলে স্ত্রীর করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন দিক থেকে আলোচনা করা যেতে পারে, যেমন - মানবিক, আইনগত ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। এটি একটি সংবেদনশীল এবং ব্যক্তিগত বিষয়, তাই প্রতিটি ক্ষেত্রে স্ত্রীর পরিস্থিতি এবং সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে করণীয় ভিন্ন হতে পারে।

এখানে কিছু সাধারণ দিক উল্লেখ করা হলো:

১. খোলামেলা আলোচনা এবং সহানুভূতি:

* আলোচনা: প্রথমেই স্ত্রীর উচিত স্বামীর সাথে খোলামেলা এবং সহানুভূতিশীল আলোচনা করা। স্বামী কেন অক্ষম, তার কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যা আছে কিনা, তা জানার চেষ্টা করা।

* বুঝতে পারা: এই সমস্যাটি স্বামীর জন্য অত্যন্ত কষ্টকর হতে পারে, তাই স্ত্রীর উচিত তাকে বোঝা এবং তার পাশে থাকা।

* চিকিৎসা: অক্ষমতার কারণ যদি শারীরিক বা মানসিক হয়, তাহলে স্বামীর চিকিৎসায় সহযোগিতা করা। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা বা থেরাপির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়। প্রয়োজনে একজন ভালো চিকিৎসক (ইউরোলজিস্ট বা সেক্সোলজিস্ট) এবং মনোবিদের সাহায্য নিতে পারেন।

২. মানসিক সমর্থন ও বিকল্প পথ:

* পারস্পরিক বোঝাপড়া: বৈবাহিক জীবনে সহবাস একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও, এটিই সব নয়। পারস্পরিক বোঝাপড়া, ভালোবাসা, সম্মান এবং মানসিক সমর্থনও অত্যন্ত জরুরি।

* অন্যান্য ঘনিষ্ঠতা: সহবাস ছাড়াও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অন্যান্য ধরনের শারীরিক ও মানসিক ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখা সম্ভব, যা সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে পারে।

৩. আইনি পদক্ষেপ (যদি প্রয়োজন হয়):

* বিবাহ বিচ্ছেদ: যদি অক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং কোনো সমাধানের সম্ভাবনা না থাকে, এবং স্বামী-স্ত্রী কেউই এই পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট না হন, তাহলে স্ত্রী আইনগতভাবে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশের বিবাহবিচ্ছেদ আইন অনুযায়ী, স্বামী যদি বিবাহের মৌলিক দায়িত্ব (যেমন সহবাস) পালনে অক্ষম হন, তবে এটি বিচ্ছেদের একটি বৈধ কারণ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

* খোলা তালাক: ইসলাম ধর্মে 'খোলা' নামক একটি বিধান আছে, যার মাধ্যমে স্ত্রী স্বামীকে কিছু প্রতিদানের বিনিময়ে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন।

* আদালতের আশ্রয়: যদি স্বামী তালাক দিতে না চান বা বিষয়টি জটিল হয়, তবে স্ত্রী আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন। আদালত স্বামীর সার্বিক অবস্থা যাচাই করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত দিতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে, আদালত স্বামীকে চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সময় দিতে পারে। যদি সেই সময়ের মধ্যে সুস্থ না হন, তবে বিচ্ছেদ কার্যকর হতে পারে।

৪. ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ (ইসলামিক):

* অধিকার: ইসলামে স্ত্রীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হলো স্বামীর কাছ থেকে শারীরিক চাহিদা পূরণ হওয়া। যদি স্বামী এই চাহিদা পূরণে অক্ষম হন, তবে স্ত্রী তার কাছ থেকে আলাদা হওয়ার অধিকার রাখেন।

* চিকিৎসার সুযোগ: অনেক ইসলামিক ফতোয়া অনুযায়ী, স্বামীকে চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সময় (যেমন এক বছর) দেওয়া যেতে পারে। যদি এর মধ্যে তিনি সুস্থ না হন, তবে স্ত্রী বিচ্ছেদ চাইতে পারেন।

* ধৈর্য ও আপোষ: কিছু ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে স্বামীর সাথে থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়, যদি স্ত্রী মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

 * ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: এটি সম্পূর্ণভাবে স্ত্রীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত যে তিনি কী করবেন। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজের মানসিক অবস্থা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং স্বামীর সাথে সম্পর্কের গভীরতা বিবেচনা করা উচিত।

 * পরামর্শ গ্রহণ: এই ধরনের পরিস্থিতিতে একজন অভিজ্ঞ পারিবারিক আইনজীবী, ইসলামিক স্কলার বা কাউন্সেলরের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে।

এই সমস্যাটি একটি দম্পতির জন্য অত্যন্ত কঠিন হতে পারে। তাই সবদিক বিবেচনা করে, পারস্পরিক সম্মান ও সমঝোতার ভিত্তিতে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।


Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post