Top News

রোজার মাসে সহবাসের বিধান সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

রোজার মাসে সহবাসের বিধান সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

রোজার সময় সহবাসের বিধান:

ইসলামে রোজার সময়, অর্থাৎ সুবহে সাদিক (ভোরের শুরু) থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও সহবাস সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এই সময়ে যদি কোনো ব্যক্তি সহবাস করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং এর জন্য কঠোর বিধান রয়েছে।

ভুলে সহবাস করলে:

যদি কোনো ব্যক্তি রোজার কথা ভুলে গিয়ে সহবাস করে ফেলে, তবে তার রোজা ভাঙবে না এবং তাকে কাফফারা আদায় করতে হবে না। তবে, মনে পড়ার সাথে সাথে তাকে সহবাস বন্ধ করে দিতে হবে। এরপর তাকে বাকি দিনটি পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে এবং পরে শুধু একটি রোজা কাজা করতে হবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করলে:

যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে রোজার সময় সহবাস করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং এর জন্য দুটি বিষয় আবশ্যক:

১. কাজা: তাকে পরবর্তীতে সেই রোজাটির কাজা আদায় করতে হবে। অর্থাৎ, রোজার পরে একটি দিনের রোজা রাখতে হবে।

২. কাফফারা: তাকে একটি কাফফারা আদায় করতে হবে। কাফফারা হলো:

* ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা রাখা: যদি কেউ ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা রাখতে সক্ষম হয়, তাহলে তাকে তাই করতে হবে। এর মাঝে একদিনও রোজা বাদ পড়লে তাকে আবার নতুন করে ৬০টি রোজা শুরু করতে হবে।

* ৬০ জন মিসকিনকে খাবার খাওয়ানো: যদি কোনো ব্যক্তি ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজা রাখতে অক্ষম হয় (যেমন: অসুস্থতা বা বার্ধক্য), তাহলে তাকে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা পেট ভরে খাবার খাওয়াতে হবে। অথবা ৬০ জন মিসকিনকে সাদকাতুল ফিতরের সমপরিমাণ খাদ্যশস্য বা তার মূল্য দিতে হবে।

রাতের বেলায় সহবাস:

ইফতারের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত সহবাস করা জায়েজ। তবে, সহবাসের পর অবশ্যই গোসল করে পবিত্র হতে হবে যাতে ফজরের নামাজের সময় হয়ে গেলে নামাজ আদায় করা যায়। গোসল না করে সেহরি খাওয়া জায়েজ, তবে নামাজের জন্য অবশ্যই গোসল করে পবিত্র হতে হবে।

সারসংক্ষেপ:

 * দিনের বেলায় (সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত) সহবাস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইচ্ছাকৃতভাবে করলে কাফফারা ও কাজা উভয়ই ওয়াজিব।

 * ভুলে করলে শুধু কাজা ওয়াজিব, কাফফারা নয়।

 * রাতের বেলায় (ইফতারের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত) সহবাস জায়েজ, তবে ফজরের নামাজের পূর্বে গোসল করে পবিত্র হতে হবে।

ইসলামী শরীয়তের বিধান অনুযায়ী, রোজার পবিত্রতা ও গুরুত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাই এসব বিধান মেনে চলা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।


Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post