Top News

সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব বা ক্লান্তি অনেকগুলো কারণের লক্ষণ হতে পারে।

 সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব বা ক্লান্তি অনেকগুলো কারণের লক্ষণ হতে পারে।

 কিছু কারণ দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সাথে সম্পর্কিত, আবার কিছু গুরুতর রোগের ইঙ্গিতও দিতে পারে।

সাধারণ কারণসমূহ

 * পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব: রাতে যদি ৭-৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, তাহলে দিনের বেলায় ঘুম ঘুম ভাব আসা স্বাভাবিক। দেরিতে ঘুমানো বা ঘুমের পরিবেশ ভালো না হলেও এমনটা হতে পারে।

 * অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: খাবারের পরিমাণ ও গুণগত মান ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে। সুষম খাবার না খেলে বা অস্বাস্থ্যকর, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত খাবার খেলে ক্লান্তি বা ঘুম ঘুম ভাব দেখা দিতে পারে।

 * পানিশূন্যতা (Dehydration): শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব হলে দুর্বলতা, মাথাব্যথা ও ক্লান্তি আসতে পারে, যার ফলে ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে।

 * শারীরিক পরিশ্রম বা অতিরিক্ত শরীরচর্চা: অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের পর শরীর ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম চাইতে পারে।

 * মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা হতাশা ঘুমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যার ফলে দিনে ঘুম পেতে পারে।

 * কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ যেমন - অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, রক্তচাপের ওষুধ বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে।

 * অ্যালকোহল বা মাদক গ্রহণ: অ্যালকোহল এবং মাদকের ব্যবহার ঘুমের ধরণে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

 * স্থূলতা (Obesity): অতিরিক্ত ওজন শরীরের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং ঘুমের গুণগত মান কমিয়ে দিতে পারে।

কিছু রোগের লক্ষণ

দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব কিছু গুরুতর রোগের লক্ষণও হতে পারে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

 * স্লিপ অ্যাপনিয়া (Sleep Apnea): এটি একটি ঘুমের ব্যাধি যেখানে ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস বারবার বন্ধ হয়ে যায় বা অগভীর হয়। এর ফলে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এবং দিনে তীব্র ঘুম ঘুম ভাব আসে।

 * হাইপারথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism): থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি হলে ক্লান্তি এবং অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব দেখা যায়।

 * রক্তস্বল্পতা (Anemia): শরীরে আয়রনের ঘাটতি বা রক্তস্বল্পতা থাকলে সারাক্ষণ ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব হয়।

 * ডায়াবেটিস: রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে বা কমে গেলেও ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে।

 * কিডনি বা লিভারের সমস্যা: কিডনি বা লিভারের কার্যকারিতা কমে গেলে শরীর থেকে টক্সিন ঠিকমতো বের হতে পারে না, যার ফলে ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব আসে।

 * হৃদরোগ: কিছু হৃদরোগের ক্ষেত্রেও দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুম পেতে পারে।

 * ক্যান্সার: কিছু ধরণের ক্যান্সারেও শরীর দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব হতে পারে।

 * ভিটামিন বা খনিজ উপাদানের ঘাটতি: ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২ বা আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের অভাবেও শরীর ক্লান্ত ও ঘুম ঘুম অনুভব করতে পারে।

 * হাইপারসোমনিয়া (Hypersomnia): এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি, যেখানে রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের পরও দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম আসে।

করণীয়

যদি আপনার দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব থাকে এবং তা আপনার দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে, তবে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ডাক্তার আপনার উপসর্গগুলো শুনে এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা দিতে পারবেন।

এছাড়া, কিছু জীবনযাত্রার পরিবর্তনও ঘুম ঘুম ভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে:

 * প্রতিদিন পর্যাপ্ত (৭-৮ ঘণ্টা) ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

 * সুষম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন।

 * পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।

 * নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন।

 * দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য মেডিটেশন বা রিল্যাক্সেশন টেকনিক অনুশীলন করতে পারেন।

 * ঘুমানোর আগে চা, কফি বা অ্যালকোহল পরিহার করুন।


Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post