আগে কেবল ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে দেখা যেত কোলন ক্যানসার। তবে আজকাল ২০-২৫ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে এই রোগ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আধুনিক জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং পরিবেশগত দূষণ এর মূল কারণ।

কীভাবে শুরু হয় কোলন ক্যানসার?

কোলন হলো বৃহৎ অন্ত্রের অংশ, যা খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণ এবং বর্জ্য পদার্থ বের করার কাজ করে। এর শেষ অংশ মলদ্বার। কোলন বা মলদ্বারে ক্যানসার সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয়, কিন্তু তা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষজ্ঞ বিকাশকুমার আগরওয়াল জানাচ্ছেন, “আজকের তরুণরা প্রক্রিয়াজাত খাবার, লাল মাংস, চিনি এবং কম ফাইবারযুক্ত খাদ্য বেশি খায়। এর ফলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে।”

কেন তরুণরা ঝুঁকিতে?

খারাপ খাদ্যাভ্যাস: ফাস্ট ফুড, পিৎজা, বার্গার, মোমোর মতো খাবারে ফাইবারের অভাব।

অতিরিক্ত ওজন ও ডায়াবেটিস: স্থূলতা এবং শর্করাজাত রোগ বৃহৎ অন্ত্রে প্রদাহ বাড়ায়।

ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব: নতুন গবেষণায় দেখা গেছে কোলিব্যাকটিন নামক ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রে ডিএনএ ক্ষতি করতে পারে, যা কোলন ক্যানসারের মূল কারণ।

দূষণ ও রাসায়নিক: বড় শহরে বায়ু দূষণ, মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং হরমোন-বিঘ্নিত রাসায়নিক অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।

শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা: তরুণরা বেশি সময় বসে থাকে, খেলাধূলা ও ব্যায়াম কম।

সতর্কবার্তা: কোলন ক্যানসারের লক্ষণ

🔹 দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া

🔹 পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি

🔹 মলে রক্তের উপস্থিতি

🔹 অনিয়মিত অন্ত্রের অভ্যাস

🔹 ব্যাখ্যাতীত ক্লান্তি

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই লক্ষণগুলো উপেক্ষা করলে রোগ ধীরে ধীরে বিপজ্জনক রূপ নেয়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে চিকিৎসা অনেক সহজ।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:

🔹 খাদ্যে ফাইবারের পরিমাণ বাড়ান: শাক-সবজি, ফল, ডাল।

🔹 ফাস্ট ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া।

🔹 নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক কার্যক্রম বজায় রাখা।

🔹 স্থুলতা ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ।

🔹 নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রয়োজন হলে ডাক্তার দেখানো।

তরুণদের মধ্যে কোলন ক্যানসারের বৃদ্ধির এই সতর্ক সংকেত জানাচ্ছে যে, জীবনধারায় ছোট ছোট পরিবর্তনও বড় নিরাপত্তার প্রমাণ হতে পারে।