ইসলামে মেয়েদের শরীরের লোম কাটার বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন লোম কাটা জায়েজ এবং কোনগুলো নয়:
যা কাটা জায়েজ (মুস্তাহাব/সুন্নত):
* বগল ও নাভির নিচের লোম: বগল এবং নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা মেয়েদের জন্য সুন্নত (মুস্তাহাব)। প্রতি সপ্তাহে একবার অথবা পনেরো দিনে একবার এই লোম পরিষ্কার করা উত্তম। সর্বোচ্চ চল্লিশ দিনের বেশি দেরি করা মাকরুহ (অপছন্দনীয়)। এর ফলে পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে এবং এটি স্বাস্থ্যসম্মতও বটে।
যা কাটা জায়েজ নয় (হারাম):
* ভ্রু প্লাক করা: ভ্রু প্লাক করা বা ভ্রুর আকৃতি পরিবর্তন করা ইসলামে হারাম (নিষিদ্ধ)। হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তায়ালা সেসব নারীর ওপর অভিশাপ করেছেন যারা ভ্রু প্লাক করে এবং যারা করায়। এর কারণ হলো, এটি আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন আনার শামিল।
* মুখের অবাঞ্ছিত লোম (যদি অস্বাভাবিক না হয়): সাধারণত মেয়েদের মুখে স্বাভাবিকভাবে লোম থাকে না। যদি কোনো মেয়ের মুখে পুরুষদের মতো অস্বাভাবিক লোম গজায়, তবে তা অপসারণ করা জায়েজ। কিন্তু যদি স্বাভাবিক, হালকা লোম থাকে, তবে তা প্লাক বা শেভ করা জায়েজ নয়।
* অন্যান্য লোম: হাত, পা বা শরীরের অন্যান্য স্থানের লোম যদি নারীর সৌন্দর্য নষ্ট না করে এবং স্বাভাবিক থাকে, তবে তা অপসারণ করা জায়েজ নয়। তবে যদি এই লোমগুলো অস্বাভাবিকভাবে ঘন বা দৃশ্যমান হয় এবং নারী তার স্বামীর জন্য নিজেকে সুন্দর দেখাতে চায়, তাহলে কিছু আলেম এর অনুমতি দিয়েছেন। এই বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একজন নির্ভরযোগ্য আলেমের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
সারাংশ:
ইসলাম নারীর পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যকে গুরুত্ব দেয়, তবে তা হতে হবে আল্লাহর দেওয়া প্রকৃতির মধ্যে থেকে। শরীরের যেসব লোম পরিচ্ছন্নতার জন্য অপসারণ করা জরুরি, সেগুলো অপসারণ করা জায়েজ। কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন আনা বা সৌন্দর্য বৃদ্ধির নামে কৃত্রিমতা অবলম্বন করা জায়েজ নয়।
আপনার যদি এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানার প্রয়োজন হয়, তাহলে একজন নির্ভরযোগ্য ইসলামিক স্কলারের সাথে পরামর্শ করা ভালো হবে।
Post a Comment