প্রতিবন্ধী শিশু বিভিন্ন কারণে জন্ম নিতে পারে। এর মধ্যে কিছু প্রধান কারণ নিচে দেওয়া হলো:
১. জেনেটিক বা বংশগত কারণ
* ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিকতা: ডাউন সিনড্রোম, টার্নার সিনড্রোম বা ক্লাইনফেল্টার সিনড্রোমের মতো রোগ ক্রোমোজোমের সংখ্যা বা গঠনে অস্বাভাবিকতার কারণে হয়।
* জিনগত ত্রুটি: কিছু জেনেটিক রোগ যেমন - সিস্টিক ফাইব্রোসিস বা মাসকুলার ডিসট্রফি জিনের ত্রুটির কারণে হয়ে থাকে।
২. গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জটিলতা
* মায়ের স্বাস্থ্য: গর্ভাবস্থায় যদি মা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বা থাইরয়েডের মতো রোগে ভোগেন, তাহলে শিশুর প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
* সংক্রমণ: গর্ভাবস্থায় মায়ের রুবেলা, সাইটোমেগালোভাইরাস (CMV) বা টক্সোপ্লাজমোসিসের মতো সংক্রমণ হলে তা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে প্রভাব ফেলতে পারে।
* মাদক ও অ্যালকোহল সেবন: গর্ভাবস্থায় মা যদি ধূমপান করেন, বা মাদক ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করেন, তাহলে তা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
* পুষ্টির অভাব: গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে ফলিক অ্যাসিড, আয়োডিন বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব হলে শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের গঠনে সমস্যা হতে পারে।
৩. জন্মকালীন সমস্যা
* অক্সিজেনের অভাব: জন্মের সময় যদি শিশু পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পায়, তাহলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে, যা পরবর্তীতে সেরিব্রাল পালসির মতো সমস্যার কারণ হয়।
* অকাল প্রসব: সময়ের আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ঝুঁকি বেশি থাকে।
* জন্মের আঘাত: প্রসবের সময় যদি মাথায় আঘাত লাগে, তাহলেও মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে।
৪. পরিবেশগত কারণ
* বিষাক্ত পদার্থ: শিশু যদি সীসা বা পারদের মতো বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসে, তাহলে তা তাদের স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে।
* ঔষধের প্রতিক্রিয়া: গর্ভাবস্থায় কিছু ঔষধ সেবন করলে তা শিশুর জন্মগত ত্রুটি ঘটাতে পারে।
এটা মনে রাখা জরুরি যে, অনেক ক্ষেত্রেই কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই শিশু প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নিতে পারে। এই সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করার জন্য গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
Post a Comment