Top News

দিনে মাত্র ১টি ভুলেই আপনার হার্টের ভয়া’বহ অবস্থা হচ্ছে!

দিনে মাত্র ১টি ভুলেই আপনার হার্টের ভয়া’বহ অবস্থা হচ্ছে!

আমাদের জীবনযাত্রার ভুলগুলো নীরবে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা আমরা সহজে বুঝতে পারি না। হার্ট অ্যাটাক একটি ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা বর্তমানে যেকোনো বয়সের মানুষের মধ্যে বেড়ে চলেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এমন একটি সাধারণ ভুল আছে, যা আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। আর সেই ভুলটি হলো: আপনার স্ট্রেস বা মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণ না করা।

আমরা প্রায়শই স্ট্রেসকে হালকাভাবে নিই, মনে করি এটি জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ আমাদের হৃদপিণ্ডের জন্য একটি নীরব ঘাতকের মতো কাজ করে।

স্ট্রেস কীভাবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়?
১. রক্তচাপ বৃদ্ধি: যখন আপনি মানসিক চাপে থাকেন, তখন আপনার শরীর থেকে কর্টিসল এবং অ্যাড্রেনালিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনগুলো আপনার হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। উচ্চ রক্তচাপ হৃদপিণ্ডের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

২. রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করা: দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস রক্তনালীগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এর ফলে রক্তনালীর ভেতরের অংশে প্রদাহ সৃষ্টি হয় এবং ধমনী শক্ত হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াকে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস বলা হয়, যা হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ।

৩. খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি: স্ট্রেস শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। এই খারাপ কোলেস্টেরল রক্তনালীতে জমা হয়ে রক্তপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে।

৪. খারাপ অভ্যাসের জন্ম: স্ট্রেসে থাকলে অনেকে ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া বা শারীরিক কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকার মতো খারাপ অভ্যাসগুলো বেছে নেন। এই অভ্যাসগুলো সরাসরি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

আপনার কী করা উচিত?
স্ট্রেসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব নয়, কিন্তু এটিকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে হলে এই ভুলটি আজই শুধরে নিন এবং স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণের জন্য নিচের অভ্যাসগুলো গড়ে তুলুন:

নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, জগিং বা অন্য যেকোনো শারীরিক কার্যকলাপ করুন। ব্যায়াম স্ট্রেস হরমোন কমিয়ে মন ভালো রাখার হরমোন এন্ডোরফিন নিঃসরণ করে।

ধ্যান ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম: প্রতিদিন মাত্র ৫-১০ মিনিট ধ্যান (meditation) বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম (deep breathing) করুন। এটি আপনার মনকে শান্ত করবে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে দেবে।

পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুম শরীরকে মেরামত করে এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়।

শখ বা পছন্দের কাজ: এমন কিছু করুন যা আপনাকে আনন্দ দেয়, যেমন: গান শোনা, বই পড়া, বাগান করা বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো।

মনে রাখবেন, আপনার হৃদপিণ্ডের যত্ন নেওয়া শুধু শারীরিক ব্যায়ামের ওপর নির্ভর করে না, বরং আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নির্ভর করে। স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণ করে আপনি আপনার হৃদপিণ্ডকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন এবং একটি সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন উপভোগ করতে পারেন।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post